• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

কালীগঞ্জে তীব্র খরায় ঝরছে আমের গুটি শঙ্কায় চাষিরা

  • ''
  • প্রকাশিত ০২ মে ২০২৪

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ প্রচন্ড খরার কারনে গাছ থেকে আম ঝরে পড়ছে। যে কারনে এলাকার আম চাষিদের লোকসানের বোঝা বহন করতে হবে এমন টা আশংকা করছেন। প্রতিটি বাগানের মালিকরা নিয়মিত আম গাছে পানি দিয়ে ঝরে পড়া ঠেকাতে পারছে না। এমনিতেই এ বছর প্রতিটি গাছে আমের গুটি খুবই কম ধোরেছে।ক্ষেত মালিকদের অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দাবদাহ যতোই বাড়ছে আম চাষিদের কপালে চিন্তার ভাজ ততই স্থায়ী হচ্ছে। একমাত্র বৃষ্টি ছাড়া আমের গুটি ঝরা বন্ধের সম্ভাবনা নেই বলছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেকে প্রতিনিয়ত গাছের উপরে ও গোয়ায় পানি দিচ্ছে তাতে কোন লাভ হচ্ছে না।

মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এ বছর আমের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে প্রচন্ড রোদের কারনে। প্রচন্ড গরম ও রোদের কারণে আমের মুকুল ও আমের গুটির অবস্থায় ক্ষতি হয়েছে এই দাপদাহের কারনে কালীগঞ্জ উপজেলায় আমের লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে না।তীব্র ্র তাপ প্রবাহের কারণে বোটার আঠা শুকিয়ে ঝরছে আমের গুটি। গুটি ঝরা রোধে সেচের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে সকাল ও সন্ধ্যায় পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাপের কারনে কোন লাভ হচ্ছে না।কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের আম বাগান মালিকদের ক্ষেতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে আমের গুটি ঝরে গাছের নিচেই পড়ে আছে। তবে কিছু কিছু গাছে গুটি শুকিয়ে পাশের আমের সঙ্গে ঝুলে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ গাছের আমের গুটি মাটিতে ঝরে পড়ছে।

চাষিদের দাবি ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ আমের গুটি ঝরেছে।এ বছর অধিকাংশ গাছে আম ধরেনি,বাগানে ফাকা দাড়িয়ে রয়েছে গাছগুলি।বাড়ান মালিকরা বলছে প্রায় ৭ মাস বাগানে গাছে কমিক্যাল,ভিটামিন দিয়ে আসছিল ভাল ফল পাবে।কিন্তু হাজার হাজার টাকা ব্যায় করে বাগান মালিকদের লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়নি। প্রতিটি আম বাগান মালিকদের লোকসান ক্ষেতে হবে এমন টা আশা করছেন। বাগান মালিকরা বলছেনবৃষ্টি না থাকায় আমের কিছু রোগ দেখা দিচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে আম গাছের এক ধরনের সাদা পোকা। এই পোকাগুলো থাকলে আমের ক্ষতি হচ্ছে। তবে তাপ প্রবাহের কারনে গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে। পানি দেবার পর ও গাছের গটি শুকিয়ে যাচ্ছে।অনেকে বলছেন এখন কীনাশক স্প্রে করলে আমের গুটি ক্ষতি হতে পারে।গুটি ঝরা রোধে বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প নেই। সেচ দিলে আমের গুটি ঝরা অনেকটাই কমে যাবে।

বারোবাজার এলাকার আম বাগান মালিক জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, তার রয়েছে ৮ বিঘা আম বাগান এ বছর গাছে আম আসলে ও তা ঝরে পড়ে গেছে। যে কারনে এবার আমার মাথায় হাত। জানি না সবশেষে কী হবে। তবে এ বছর আমের পরিস্থিতি ভালো না। বৈশাখের অর্ধেক চলে গেল। কিন্তু এখনও বৃষ্টির দেখা নেই।কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন,এ বছর আমের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। কারণ গাছে আম নেই বললেই চলে। এখন তাপদাহে আমের গুটি ঝরছে। বৃষ্টিপাত না হলে আমের গুটি ঝরা কমবে না।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এলাকার আম উৎপাদনে শীর্ষে থাকা এবং আমের অধ্যাসিত খ্যাত বলে পরিচিত রয়েছে। তাপদাহ ও খরার কারণে পানি শূন্যতায় ব্যাপক হারে মাটিতে ঝরে পড়ছে কৃষকের স্বপ্নের আমের গুটি। তীব্র খরা আর টানা বৃষ্টিহীনতায় শুকিয়ে গেছে পুকুর খাল ও ডোবাগুলো।সারাদেশের ন্যায় এই উপজেলায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাপদাহে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে পূরনো পুকুর খাল ও ডোবাগুলো দীর্ঘদিন খনন ও সংস্কারের অভাবে পানির ধারণ ক্ষমতা কম হওয়ায় প্রচন্ড রোদ ও গরমের কারণে আগে থেকেই সেচের কারণে পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় অধিকাংশ বাগানে গাছের গোড়ায় পানি সেচ ব্যবস্থা না থাকায় ঝরে পড়েছে গাছের আম।সূর্যের তাপের আধিক্য বেশি হওয়ায় আম ঝরে পড়া রোধ করতে না পারায় হতাশা ও শঙ্কায় দিন পার করছেন আম বাগান মালিকরা।

বিভিন্ন জায়গায় পানির সুব্যবস্থা না থাকায় আমের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বৃষ্টি হলে অনেকাংশে ক্ষতি কম হবে।গতবছরের থেকে এবার আমের মুকুল অনেক কম। তারপরও মোটামুটি আমের গুটি ভালো এসেছে কিন্তু প্রচন্ড খরার কারণে আমের গুটিগুলো এখন ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাগানে এবার অনেক টাকা লোকসানের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।বাগান মালিকরা বলছেন মুকুল আসার পূর্বে বাগান পরিচর্যা করাই মোটামুটি ভালো মুকুল এসেছিল। পরবর্তী সময়ে আমের গুটিও ভালোই ছিল কিন্তু বর্তমানে খরায় গুটি ঝরে পড়ছে।এলাকার অনেক আম বাগানীরা জানান, প্রচন্ড রোদের কারণে গাছের গোড়ায় পানি ও ওষুধ স্প্রে করে গাছের আম রক্ষার চেষ্টা করেও গাছে আম আটকাতে পারছেন না।

তাছাড়া সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় বাগানে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না।কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন তীব্র তাপদাহের কবল থেকে রক্ষা পেতে আম চাষিদের আম গাছের গোড়ায় বেশি করে পানি দিতে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রোদের তীব্রতা বাড়ার আগেই ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে বলা হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads